সামাজিক অন্যায় অনাচার প্রতিরোধের জন্য ইসলামের বিধান কি?

সামাজিক অনাচার দূর করতে ইসলাম আত্মরক্ষামূলক ও বাস্তব কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে গিয়ে বিধি-বিধান আরােপ করেছে।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমতুল্লাহ

অনাচার প্রতিরােধে ইবাদতের ভূমিকা:

সমাজ থেকে যাবতীয় অন্যায়-অবিচার দূর করার জন্য প্রয়ােজন একদলভাল মানুষ। যারা কোনাে মানুষের বা শাসকের বা শাসনদণ্ডের ভয়ে বরং মহান

 আল্লাহর ভয় ও ভালবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যাবতীয় অন্যায়-অবিচার থেকে বিরত থাকবে। মহান আল্লাহ পাক' মুসলমানদের সে লক্ষ্যে গড়ে তােলার জন্য

 তাদের উপর মৌলিক কতকগুলাে ইবাদত অনুষ্ঠান যেমন- সালাত, সাওম, হজ্ব ও যাকাত বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। 

এ ইবাদত অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে মানুষ প্রকৃতপক্ষেই আদর্শ মানুষে পরিণত হয়। যেমন- মহান আল্লাহর ঘােষণা, “নিশ্চয়ই সালাত যাবতীয় অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে।” (আনকাবুত : ৪৫) 

“সাওম তােমাদের উপর এ জন্য ফরজ করা হয়েছে যাতে তােমরা খােদা ভীরু হতে পার।” “সাওম হল ঢাল স্বরূপ" যা যাবতীয় অন্যায় কাজ থেকে তােমাদেরকে হেফাজত করবে। 

কাজেই নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, ইসলামের ইবাদত অনুষ্ঠান পালন করার মাধ্যমে অন্যায়-অবিচার থেকে বিরত থাকার মানসিকতা গড়ে তােলা যায়।


আরও পড়ুন,

কাবাঘর নির্মানকারীগন ও কাবা শরীফের সম্প্রসারণগনের নাম।  

অন্যান্য সৃষ্টির মাঝে মানুষের মর্যাদা শেষ্ঠ কেন? 

অনলাইন কে আমরা কোন কাজে ব্যবহার করছি  

খিলাফত ও খুলাফায়ে রাশেদীন 

মদিনা সনদ ও মদিনা সনদের তাৎপর্য 

ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্ব নবীর ভুমিকা  

ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ 


অন্যায়-অনাচার প্রতিরোধে ঈমানের ভূমিকা:

 ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায়-অনাচারগুলাে হলাে-

১) চুরি - ডাকাতি; 

২) অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ;

 ৩) মজুদদারি; 

৪) সুদ প্রথা; 

৫)মাদক সেবন ও জুয়া;

 ৬) যিনা ব্যভিচার;

 ৭) কলহ-বিবাদ; 

৮) রাহাজানি-চোরাচালানী

৯) মিথ্যাচার;

 ১০) প্রতারণা; 

১১) ঘুষ; 

১২) সন্ত্রাস; 

১৩) হত্যা ইত্যাদি

এ সকল কাজকে ইসলাম হারাম বলেছে।




সামাজিক অনাচার প্রতিরোধের জন্য ইসলামের বিধানঃ

সামাজিক অনাচার দূর করতে ইসলাম আত্মরক্ষামূলক ও বাস্তব কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে গিয়ে বিধি-বিধান আরােপ করেছে। 

যথা- ইসলাম যাবতীয় সামাজিক অপরাধ ও ব্যভিচারকে অবৈধ ঘােষণা করে তা থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। 

একইসাথে মৌলিক ইবাদত যথা- নামায, রােযা, যাকাত ও হজ আবশ্যকীয় করেছে এবং যারা ইসলামী বিধান অমান্য করবে তাদের জন্য ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছে।

ইসলামের নিষিদ্ধকৃত কাজ:

ইসলামের নিষিদ্ধকৃত কাজ গুলাে হচ্ছে চুরি, ডাকাতি, যিনা, ব্যভিচার অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ সন্ত্রাস, প্রতারণা, অবৈধ ব্যবসা, গানবাজনা ও

 অন্যকে ঠকানাে ইত্যাদি। যদি ইসলামের বিধানগুলাে পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়, তাহলে সমাজে কোনাে প্রকার অন্যায় অবিচার থাকবে না তা হলফ করে বলা চলে।


ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আইন

১) প্রতিরােধমূলক :

 ইসলাম অপরাধ সংঘটনের পথ খােলা রেখে মানুষকে অপরাধ করার সুযােগ দেয় না বরং অপরাধের কারণসমূহ যাতে সংঘটিত না হয়, তার জন্য প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।


২) ইনসাফ ভিত্তিক : 

ইসলাম বিচারের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করে। অপরাধী ও যে সমাজের বিরুদ্ধে সে অপরাধ করেছে, এ উভয়ের পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে। ইসলাম চোরের হাত

 কেটে দিতে বলে কিন্তু যেখানে সামান্যতম সন্দেহের অবকাশ থাকে যে, চোর ক্ষুধার তাড়নায় চুরি করেছিল, সেখানে কিছুতেই এ শাস্তি দেয়া হয় না। সামান্য জিনিস

 চুরির জন্য চোরের হাত কাটা হয় না। অবিবাহিত স্ত্রী-পুরুষের ব্যভিচারের ক্ষেত্রে শাস্তির মাত্রা লাঘব
করা হয়।

৩) আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান : 

ছােট-বড়, ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালাে সকলের
জন্য ইসলাম একই শাস্তির বিধান দেয়। দেশের কোনাে ব্যক্তিই আইনের উর্ধে নয় ।

৪) সংশােধনমূলক : 

আল্লাহর হক সম্পর্কিত অপরাধের জন্য ইসলাম অপরাধীকে তাওবা করার সুযােগ দেয়। খালিস নিয়াতে

 তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা তা ক্ষমা করে দেন। ফলে সে নিজে সংশােধিত হওয়ার সুযােগ পায় ।

৫) কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি : 

ইসলাম অপরাধের ক্ষেত্রভেদে বেত্রাঘাত, রজম ও
শিরচেছদের বিধান দেয়। এগুলাে কঠোর ও কঠিন শাস্তি। কিন্তু এ শাস্তি জনসমক্ষে দিতে হবে, যেন

 সাধারণভাবে মানুষ শাস্তির কঠোরতা দেখে অপরাধ করা থেকে বিরত থাকে।সামাজিক শান্তি রক্ষার জন্যে এরূপ শাস্তির প্রয়ােজনীয়তা অনস্বীকার্য।


আরো পড়ুন,

কিভাবে মানব ধারা বিস্তার লাভ করেছে।?

রুহ বা আত্মা কি?

মানুষ কি বানরের বিবর্তনবাদের মাধ্যমে সৃষ্টি







লেখকঃA.K

2 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন