ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্ব নবীর ভুমিকা

ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্ব নবীর ভুমিকা
ইসলামি রাষ্ট্র

ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্ব নবীর ভুমিকা 

 হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন মুসলমান জাতির একজন সফল প্রতিষ্ঠাতা। শতধা বিভক্ত আরব জাতিকে তিনি সীমিত সময়ের মধ্যেই একটি সংঘবদ্ধ আদর্শিক জাতিতে পরিণত করেছিলেন।

 ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন একজন অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব) জাতি গঠনে হযরত মুহাম্মদ (স) এর পদক্ষেপগুলো সভ্যতা এবং মানবতাবর্জিত।


ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ (স) এর ভূমিকা: 

১) আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠায় মহানবী (স) নৈরাজ্যপূর্ণ শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক আইন প্রতিষ্ঠা করে চিরকাঙ্খিত শাস্তি স্থাপন করে গেছেন।


২) আল্লাহ তায়ালার সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা হযরত মুহাম্মদ (স) প্রবর্তিত ইসলামী রাষ্ট্রের মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালাকে নিরুঙ্কুশ একচ্ছত্র সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বলে ঘোষণা করেন। একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই এই বিশ্ব জগতের সৃষ্টিকর্তা।


৩) ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠা আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি (নবী) অসাম্যতা দূর করে ন্যায়বিচার এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে সমাজ হতে অপরাধপ্রবণতাকে দূর করে ন্যায়বিচার এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে সমাজ হতে অপরাধপ্রবণতাকে বিলুপ্ত করে দেন । (8) আল কুরআনকে সংবিধান ঘোষণা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স) আল কুরআনকেই ইসলামী রাষ্ট্রের মূল সংবিধান বলে ঘোষণা করেন। আবার আল কুরআনের নীতি ও আদর্শের আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনার বিধি বিধান প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করেন।


৫) শাসনতন্ত্র প্রণয়ন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) আল কুরআনের নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে একটি লিখিত শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করেন। ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র যা মদিনার সনদ নামে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।


৬) সুসংহত শাসন প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রের সুসংহত শাসন প্রতিষ্ঠা দেশকে কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা এবং বিচারক নিযুক্ত করেছিলেন ।




(৭) আদর্শের ভিত্তিতে জাতি গঠন মানুষে মানুষের কৃত্রিম ভেদাভেদ এবং পার্থক্য তুলে দিয়ে ধর্মের সেতু বন্ধনে এক আদর্শিক জাতি প্রতিষ্ঠায় তিনি অনন্য অবদান রাখেন। ধর্মের ভিত্তিতে এটিই ছিল প্রথম অনন্য প্রয়াস যা মানবজাতির কল্যাণে এক অনবদ্য আদর্শময় দলিল রয়ে গেছে।


৮) সম্প্রদায়ের সমন্বয় জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের সদিচ্ছা এবং সহযোগিতার ভিত্তিতে একটি জাতি গঠনে মহানবী (স) অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। তাঁর আদর্শ প্রজাতন্ত্রে সব ধর্মাবলম্বী লোকদের পূর্ণ ধর্মীয় ও নাগরিক স্বাধীনতা প্রদান করেন।


(৯) বিশ্বশান্তির অগ্রদূত। মানবসভ্যতার কল্যাণে যাঁর আবির্ভাব এই পৃথিবীতে তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স)। তিনি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত তিনিই সর্বপ্রথম । পৃথিবীর করতে সকল ধর্মীয় সংঘাত দূর করে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনে শাস্তি প্রতিষ্ঠা • তাঁর উদারতা সহনশীলতা ও মহত্ত্বের পরিচয় দান করেন।


১০) ঈমান ও জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে একাত্নবোধে অনুপ্রাণিত করে এক মহান আদর্শ, উদ্দেশ্য এবং গন্তব্যের পথে পরিচালনা করে। এখানেই তাঁর শ্রেষ্ঠ মহানুভবতা সুস্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে।


১১) বিশ্ব গণতন্ত্রের বীজবপনকারী হযরত মুহাম্মদ (স) সব মত ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে মদিনার সংবিধান রচনা এবং সহাবস্থান ইত্যাদি গণতন্ত্রেরই বাস্তব রূপায়ন করেন । তিনি বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের রীতি অনুসরণ করে গণতান্ত্রিক আদর্শের বীজবপন করে গেছেন।


১২) ঐশীতন্ত্র ও গণতন্ত্রের সমন্বয়ে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। মহানবী (স) পবিত্র কুরআনের নির্দেশ নিজের বিবেক বুদ্ধি এবং শিক্ষিত লোকদের সম্মিলিত মতামত অনুযায়ী তিনি রাজ্য শাসন পরিচালনা করতেন। এভাবে ঐশীতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের পূর্ণ সমন্বয়ে আরব দেশে হযরত মুহাম্মদ (স) এক অভিনব এবং বৈপ্লবিক শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।

আরও পড়ুন, 

ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ

খিলাফত ও খুলাফায়ে রাশেদীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন