রমযান মাসে যে চারটি কাজ বেশি বেশি করা উচিত

রমযান মাসে যে চারটি কাজ বেশি বেশি করা উচিত:

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। 
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমুল্লাহ।
  
রমাদান

হযরত সালমান (রাযিঃ) বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের শেষ তারিখে আমাদিগকে নসীহত করিয়াছেন।

যে, তােমাদের উপর এমন একটি মাস আসিতেছে, যাহা অত্যন্ত মর্যাদাশীল ও বরকতময়। এই মাসে এমন একটি রাত্র (শবে কদর) রহিয়াছে, যাহা হাজারাে মাস হইতে উত্তম। আল্লাহ তায়ালা এই মাসে রােযা রাখাকে ফরজ করিয়াছেন এবং এই মাসের রাত্রগুলিতে নামায অর্থাৎ তারাবীহ) পড়াকে সওয়াবের কাজ বানাইয়াছেন। 

যে ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য এই মাসে কোন নফল এবাদত করিল, সে যেন রমযানের বাহিরে একটি ফরজ আদায় করিল। আর যে ব্যক্তি এই
মাসে কোন ফরজ আদায় করিল সে যেন রমযানের বাহিরে সত্তরটি ফরজ আদায় করিল। 

ইহা ছবরের মাস আর ছবরের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা জান্নাত রাখিয়াছেন। ইহা মানুষের সহিত সহানুভূতির মাস। এই মাসে মুমিনের রিযিক বাড়াইয়া দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি কোন রােযাদারকে ইফতার করাইবে, ইহা তাহার জন্য গােনাহমাফী ও জাহান্নাম হইতে মুক্তির কারণ হইবে এবং সে রােযাদারের সমান সওয়াবের ভাগী হইবে। 

কিন্তু রােযাদার ব্যক্তির সওয়াবের মধ্যে কোন কম করা হইবে না। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে প্রত্যেকেই তাে এমন সামর্থ্য রাখে না যে, রােযাদারকে ইফতার করাইতে পারে। হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইলেন, (পেট ভর্তি করিয়া

খাওয়াইতে হইবে না) এই সওয়াব তাে আল্লাহ তায়ালা একটি খেজুর
খাওয়াইলে অথবা এক ঢােক পানি পান করাইলে অথবা এক চুমুক দুধ পান করাইলেও দান করিবেন। ইহা এমন মাস যে, ইহার প্রথম অংশে
আল্লাহর রহমত নাযিল হয়, মধ্যের অংশে গােনাহ মাফ করা হয় এবং শেষ অংশে জাহান্নাম হইতে মুক্তি দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি এই মাসে।

আপন গােলাম (ও কর্মচারী বা খাদেম)এর কাজের বােঝা হালকা করিয়া।
দেয়, আল্লাহ তায়ালা তাহাকে মাফ করিয়া দেন এবং জাহান্নামের আগুন হইতে মুক্তি দান করেন। এই মাসে চারটি কাজ বেশী বেশী করিতে থাক।।
কাজ এইরূপ যাহা না করিয়া তােমাদের উপায় নাই।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এই রোজার মাসে তোমরা ৪টি কাজ বেশি বেশি কর-

প্রতিপালকের জন্য ২ কাজ:

 প্রথম দুই কাজ যাহা আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করিবে উহা এই যে, অধিক পরিমাণে কালেমায়ে তাইয়্যেবা পড়িবে এবং এস্তেগফার করিবে। আর দুইটি কাজ হইল, আল্লাহ তায়ালার নিকট জান্নাত পাওয়ার জন্য দোয়া করিবে এবং

আর নিজেদের জন্য যে ২ কাজ করতে হবে:

জাহান্নাম হইতে মুক্তির জন্য দোয়া করিবে।যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে পানি পান করাইবে, আল্লাহ তায়ালা (কেয়ামতের দিন) তাহাকে আমার কাউসার কাউসার হইতে এইরূপ পানি পান করাইবেন যাহার পর জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত আর পিপাসা লাগিবে না।(ইবনে খুযাইমাহ,বাইহাকী, ইবনে হিব্বান)


প্রথম বিষয় ও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসের বিশেষ এহতেমাম করিয়াছেন, যে কারণে তিনি রমযানের পূর্বে শাবান মাসের শেষ তারিখে ইহার গুরুত্বের উপর বিশেষভাবে নসীহত করিয়াছেন এবং লোকদিগকে সতর্ক করিয়া দিয়াছেন
 যে, রমযানুল মুবারকের একটি মুহূর্ত যেন নষ্ট না হয় বা
 
অবহেলার মধ্যে কাটিয়া না যায়। এই নসীহতের মধ্যে তিনি পূরা মাসের ফযীলত বয়ান করিয়া আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে সকলের মনােযােগ আকর্ষণ করিয়াছেন। 

তন্মধ্যে প্রথম হইল, শবে কদর। এই শবে কদর প্রকৃতপক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত্র । তিনি এরশাদ ফরমাইয়াছেন যে,আল্লাহ তায়ালা রমযান মাসের রােযা ফরজ করিয়াছেন এবং উহার রাত্রি জাগরণ অর্থাৎ তারাবীর নামাযকে সুন্নত করিয়াছেন। 

ইহা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তারাবীর নামাযের হুকুমও স্বয়ং আল্লাহর তরফ হইতে আসিয়াছে। সুতরাং যে সমস্ত বর্ণনায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবীকে নিজের দিকে সম্বন্ধ করিয়া বলিয়াছেন যে,
তারাবীহকে আমি সুন্নত করিয়াছি, ইহার অর্থ হইল, গুরুত্ব দেওয়া।

কেননা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহার প্রতি অনেক বেশী গুরুত্ব দিতেন। এই কারণেই সকল ইমাম ইহার সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে
একমত। বুরহান’ কিতাবে আছে, একমাত্র রাফেজী সম্প্রদায় ছাড়া এই
নামাযকে আর কেহ অস্বীকার করে না।

4 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন