দোয়া কবুলের সম্ভাবনাময় সময়গুলি

🌺দোয়া কবুলের সম্ভাবনাময় সময়গুলি🌺


যেকোনো সময় আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করেন। তবে হাদিসে কিছু বিশেষ সময়ের কথা উল্লেখ রয়েছে, যখন দোয়া করলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।


দোয়া কবুলের সম্ভাবনাময় সময়গুলি


💠শেষ রাতে দোয়া করলে কবুল হয়:

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ❝মহান আল্লাহ প্রতি রাতের শেষ প্রহরে (যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে) দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। তিনি তখন বলেন, ‘আছ কি কোনো আহ্বানকারী? আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কোনো প্রার্থনাকারী কি আছো, আমি তোমাকে যা চাও তা দেব? কেউ কি ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি  তোমাকে ক্ষমা করে দেব।❞(মুসলিম, হাদিস : ৭৫৮)


💠সিজদার সময় দোয়া:

 আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ❝সিজদারত বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী। সুতরাং সে সময় বেশি বেশি দোয়া করো।❞(মুসলিম, হাদিস : ৪৮২)


💠আজানের সময় দোয়া:

রাসুল (সা.) বলেন, ❝যখন মুয়াজ্জিন আজান দেয় আসমানের দোয়ার খুলে যায় ও দোয়া কবুল হয়।❞ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ১৮৮৪)


💠আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া:

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ❝আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।❞ (তিরমিজি, হাদিস : ২১২)


💠ফরজ নামাজের পর দোয়া:

আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ❝একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি উত্তর দিলেন, ‘রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পর।❞ (সুনানে তিরমিজি: ৩৪৯৮)


💠জুমার দিন দোয়া কবুল হয়:

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবুল কাসিম (সা.) বলেন, ❝জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যদি সে মুহূর্তটিতে কোনো মুসলিম দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণের জন্য দোয়া করলে তা আল্লাহ তাকে দান করবেন।❞ (বুখারি: ৬৪০০; মুসলিম: ১৪০৭)


💠বৃষ্টির সময় দোয়া কবুল হয়:

রাসুল (সা.) বলেন, ❝দুই সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। আজানের সময়ের দোয়া ও বৃষ্টি বর্ষণের সময়ের দোয়া।❞ (সুনানে আবু দাউদ, সহিহুল জামি, হাদিস : ৩০৭৮)


💠রমজান ও শবে কদরের রাত:

রাসুল (সা.) বলেন, ❝যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের (জীবনের) সব গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।❞ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৭২)


💠রোজাদার ব্যক্তির ইফতারের সময়ের দোয়া:

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ❝তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেয়া হয় না। যখন রোজাদার ব্যক্তি ইফতার করে। ন্যায় পরায়ন শাসক। নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া।❞ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি)


💠অনুপস্থিত মুসলিম ভাই বা বোনের জন্য অন্তর থেকে উৎসরিত দোয়া:

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, ❝এমন কোন বিশ্বাসী বান্দা নেই, যে তার অনুপস্থিত কোন ভাইয়ের জন্য দোয়া করে আর ফেরেশতারা বলে না ‘তোমার জন্যও তা হোক'।❞ (মুসলিম)


💠আরাফাতের দিনের দোয়া:

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ❝দোয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো আরাফাতের দিনের দোয়া।❞ (তিরমিজি)


💠জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের দোয়া:

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ❝জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল অন্য যে কোনে দিনের আমলের চেয়ে উত্তম।❞ (বুখারি)


💠 মুসাফিরের দোয়া:

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, ❝তিনটি দোয়া (আল্লাহর দ্বারা) ফিরিয়ে দেয়া হয়না। সন্তানের জন্য পিতামাতার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া।❞ (বায়হাকি, তিরমিজি)


আল্লাহ তাআলা আমাদের বেশি বেশি দোয়া করার মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন, তাঁর প্রিয় বান্দাদের কাতারে  শামিল করুন  এবং আমাদের মনে নেক বাসনা গুলো কবুল করুন। আমিন।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন