বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম সঠিক নিয়ম

বিতর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় আমরা অনেকেই জানি না।আবার অনেকে দোয়া কুনূত পারে না, তাই বিতর নামাজ ছেরে দেয়।আজকে আমরা জানবো বিতর নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম এবং দোয়া কুনূত না পাড়লে করনীয় কি?আসুন তাহলে জেনে নেই

বিতর নামাজের নিয়ত-বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম-৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম-বিতর নামাজের নিয়ত ও নিয়ম-বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পারলে-বিতর নামাজে দোয়া কুনুত বাংলা,

এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো ঃ

১)বিতর নামাজের নিয়ত,

২)বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম,

৩)৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম,

৪)বিতর নামাজের নিয়ত ও নিয়ম,

৪)বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পারলে,

৫)বিতর নামাজে দোয়া কুনুত বাংলা,


বিতর নামাজ ইমামে আজম হযরত আবু হানিফা (রহঃ)-এর মতে বিতর নামায ওয়াজিব। বিতর নামায ছেড়ে দিলে গোনাহগার হবে। কোন কারণ বশতঃ বিতর নামায ছুটে গেলে এর কাযা আদায় করতে হবে। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে


হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মহানবী (সঃ) ইরশাদ করেছেন, যে বিতর নামায আদায় না করে নিদ্রায় গেছে অথবা তা ভুলে গেছে, সে যেন তা স্মরণ


হওয়া মাত্র আদায় করে নেয় অথবা যখন সে জাগ্রত হয়। (তিরমিযী, আবূ দাউদ ও ইবনে মাজাহ)



বিতর নামাযের রাকআতের সংখ্যা


ইমাম আজম হযরত আবু হানিফা (রহঃ) বলেছেন, বিতর নামায তিন রাকআত। ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) ও অন্যান্য ইমামগণের মতে তা এক রাকআত। আসলে মহানবী (সঃ) তাহাজ্জুদের নামায সর্বদা জোড় অর্থাৎ দুই রাকআত, চার রাকআত, আট রাকআত করে আদায় করেছেন


। অতঃপর তিন রাকআত আবার কখনও এক রাকআত দ্বারা তাকে বিতর অর্থাৎ বিজোড় করেছেন। সুতরাং সাহাবীদের মধ্যে যিনি যা দেখেছেন তিনি তাই বর্ণনা করেছেন। আমাদের মাযহাবে বিতর নামায তিন রাকআত। এক রাকআত আদায় করলে বিতর আদায় হবে না।


বিতর নামাযের নিয়ত


تويت أن أصلى لله تعالى تلك ركعات صلوة الوتر واحب الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفـة الله اكبر


উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছালিয়া লিল্লাহি তা'আলা ছালাছা রাকআ তি সালাতিল বিতরি ওয়াজিবুল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।


 বাংলা নিয়ত ঃ আমি কেবলামুখী হইয়া আল্লাহর জন্য বিতরের তিন রাকয়াত ওয়াজিব নামায আদায় করিবার নিয়ত করিলাম, আল্লাহু আকবার ।


রমযান মাসে বিতর নামায ইমামের সাথে জামাআতের সাথে আদায় করা হলে ওয়াজিবুল্লাহি তাআলার পর বলতে হবে ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমাম অর্থাৎ আমি এ ইমামের ইকুতাদা করলাম। তারপর বাকী অংশ পাঠ করবে।


বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম


মাগরিব নামাযের তিন রাকআত ফরয যে নিয়মে আদায় করতে হয় বিতর নামাযও সেই নিয়মেই আদায় করতে হয়। শুধু পার্থক্য হচ্ছে, নিয়ত করার সময় ওয়াজের জায়গায় বিতর আর ফরযের জায়গায় ওয়াজিব কথা দুটি উচ্চারণ করতে হবে।


দু'রাক'আত পড়ে প্রথম বৈঠকের পর দাড়িয়ে যাবে এবং সূরা ফাতেহা ও অপর একটি সূরা পাঠ করে “আল্লাহু আকবার" বলে কান পর্যন্ত (মহিলাদের কাধ পর্যন্ত) হাত তুলে পুনঃ হাত বাঁধবে। অতঃপর দোআ কুনূত পাঠ করে রুকু করবে, এভাবে তৃতীয় রাকাআত পড়ে বসে তাশাহহুদ, দুরূদ এবং দোয়া মাসূরা পড়ার পর সালাম ফিরিয়ে নামায সমাপ্ত করবে।


বেতের নামাযের তিন রাকাআতের প্রত্যেক রাক'আতেই সূরা ফাতেহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পাঠ করা ওয়াজিব।


বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পারলে


কেউ দোয়া কুনুত পড়তে না জানলে তা শিক্ষা করার চেষ্টা করবে এবং না শেখা পর্যন্ত নিম্নের দোয়া পাঠ করবে

ربنا أننا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار .

উচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়াকিনা আযাবান্নার ।

অথবা তিনবার এ (আল্লাহুম্মাগফিরলী) অথবা তিনবার , (ইয়া রাব্বি) পাঠ করবে এবং এতেই তার নামায আদায় হয়ে যাবে। তবে দোয়া কুনূত শিক্ষা করতে হবে।

দো''য়া কুনূত বাংলা


দোয়া কুনূত বাংলা-বিতর নামাজের নিয়ত-বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম-৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম-বিতর নামাজের নিয়ত ও নিয়ম-বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পারলে-বিতর নামাজে দোয়া কুনুত বাংলা,


উচ্চারণ ঃ আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈ নুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা ওয়া নু' মিনু বিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়া নুসনী আ'লাইকাল খাইর। ওয়া নাকুরুকা ওয়ালা নাফুরুকা ওয়া নাখলাউ' ওয়া নারুকু মাই ইয়ারুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া লাকা নুসাল্লী ওয়া নাজ্জুদু ওয়া ইলাইকা নাসআ ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখা-আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিকুফ্ফারি মুলহিক।


অর্থ : হে আল্লাহ্ ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং ক্ষমা ভিক্ষা করছি। এবং তোমার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করছি আর তোমারই উপর ভরসা করছি, তোমারই উত্তম উত্তম গুণগান করছি এবং তোমারই শোকর আদায় করছি, (কখনও) তোমার নাশোকরী বা কুফরী করব না, যারা তোমার অবাধ্য হবে তাদেরকে আমরা পরিত্যাগ করে চলব। হে আল্লাহ্! আমরা একমাত্র তোমারই দাসত্ব করছি, একমাত্র তোমার উদ্দেশেই নামায আদায় করছি, একমাত্র তোমাকেই সেজদা করছি এবং একমাত্র তোমার নির্দেশ পালন ও তাবেদারীর জন্য সর্বদা প্রস্তুত আছি। সর্বদা তোমার রহমতের আশা এবং আযাবের ভয় হৃদয়ে পোষণ করিছে। যদিও তোমার আসল আযাব তা কেবলমাত্র নাফরমানদের উপরই হবে। তবুও আমরা সে আযাবের ভয়ে কল্পমান থাকি ।

2 মন্তব্যসমূহ

  1. রেফারেন্স চাই।৩ রাকাত যে এভাবে পড়তে হয়,মনগড়া বলবেন প্লিজ।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. আসসালামু আলাইকুম।
      ধন্যবাদ আপনাকে কমেন্ট করার জন্য।হযরত মুহাম্মদ (সা.) হতে কোন প্রকার হাদিস পাওয়া যায় না যে উপরোক্ত ভাবে বেতের নামায আদায় করতে হবে।তবে এই রুপ হাদিস পাওয়া যায় তোমরা ওইভাবে বেতের সালাত আদায় করো না যেভাবে মাগরিবের সালাত আদায় করো।আমি আগেই বলে দিয়েছি হানাফি মাযহাব মতে আর হানাফি মাযহাব মতে উপরোক্ত ভাবে বেতের সালাত আদায় করা হয়ে থাকে।আর হলো বেতের সালাতে দোয়ায় কুনুত পড়া
      আবুল হাওরা (রহঃ) থেকে বর্ণিত:

      তিনি বলেন, হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে কয়েকটি বাক্য শিখিয়ে দিয়েছেন। এগুলো আমি বিতরের নামাযে পাঠ করে থাকিঃ “হে আল্লাহ! যাদেরকে তুমি হিদায়াত করেছো আমাকেও তাদের সাথে হিদায়াত কর, যাদের প্রতি উদারতা দেখিয়েছ তুমি তাদের সাথে আমার প্রতিও উদারতা দেখাও। তুমি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ তাদের সাথে আমার অভিভাবকত্বও গ্রহণ কর। তুমি আমাকে যা দান করেছ তার মধ্যে বারকাত দাও। তোমার নির্ধারিত খারাবি হতে আমাকে রক্ষা কর। কেননা তুমিই নির্দেশ দিতে পার, তোমার উপর কারো নির্দেশ চলে না। যাকে তুমি বন্ধু ভেবেছ সে কখনও অপমানিত হয় না। তুমি কল্যাণময়, তুমি সুউচ্চ”।

      সহীহ্। ইরওয়া- (৪২৯), মিশকাত- (১২৭৩), তা'লীক আলা-ইবনু খুজাইমাহ- (১০৯৫), সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১২৮১)।

      মুছুন
নবীনতর পূর্বতন