ওযু ভঙ্গের কারণ | ওযু ভাঙার কারণ কয়টি ও কি কি

ওযু ভঙ্গের কারণ | ওযু ভাঙার কারণ কয়টি ও কি কি


অযু ভঙ্গের কারণ 

১. প্রসাব-পায়খানা করলে।

২. পায়খানার রাস্তা দিয়ে বায়ু নির্গত হলে।

৩. শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।

৪. নিদ্রামগ্ন হলে।

৫. মুখ ভরে বুমি করলে।

৬. নামাযের মধ্যে সশব্দে হাসলে।


সংখিপ্ত ভাবে অজু করার বর্ননা:-



বিসমিল্লাহ বলে অজু আরম্ভ করিতে হবে।প্রথমে দুইহাতের কব্জি পর্যন- তিনবার ধুতে হবে।তারপর মুখে পানি দিয়ে কুলি করতে হবে এবংমেছওয়াক করতে হবে।রোজা না থাকলে গরগরার সহিত কুলি করতে হবে।তারপরতিন বার নাকে পানি দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে অর্থাৎ বাম হাতের আঙ্গুলি দিয়ে নাকপরিস্কার করে নিতে হবে।


 তারপর সম্পুর্ন মুখ মন্ডল তিনবার ধুতে হবে। তারপর প্রথমেডান হাত এবং পরে বাম হাত কনুইসহ তিনবার করে ধুতে হবে। তারপর সমস- মাথাএকবার মসেহ করতে হবে। তারপর তারপর দুই হাতের পিঠ দিয়ে ঘার মসেহ করতেহবে।সবশেষে প্রথমে ডান পা পরে বাম পা টাকনু সহ তিনবার করে ধুতে হবে।


অযু ভঙ্গের কারণ সমুহ

 ১. প্রসাব বা পায়খানা করলে।

২. পায়খানার রাস-া দিয়ে বায়ু বা অন্য কিছূ নির্গত হলে।

৩. শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বা পুজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।

৪. নিদ্রাভিভুত হলে অর্থাৎ কাত হয়ে বা হেলান দিয়ে কিংবা এমন কিছুতে ঠেস দিয়েযে,তা সরিয়ে নিলে সে পড়ে যাবে।

৫. মুখ ভরে বমি করলে।

৬. নামাযের মধ্যে শব্দ করে হাসলে।

৭. পাগল বা মাতাল হলে।

৮. কারো নাক দিয়ে কোন কিছু ঢুকে মুখ দিয়ে বের হলে।

৯. যদি মুখ দিয়ে থুথুর সাথে রক্ত বের হয় এবং থুথুর চেয়ে রক্তের পরিমান বেশী বাসমান হয় তাহলে ওযু ভেঙ্গে যাবে।

১০. স্ত্রীকে কাম ভাব সহকারে স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে।

১১. লজ্জা স্থানে বিনা আবরনে হাত পড়লে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে।



যে সব কারনে ওযু ভাঙ্গেনা


 ১. কোন কিছুর আঘাতে বা মেসওয়াকের কারনে থুথুর সাথে রক্ত দেখা গেলে ওজূযাবেনা।যতক্ষন না রক্ত প্রবাহিত হয়ে মুখ থেকে বের হয়ে আসে।


২. স্ত্রী-স্বামীকে  কিংবা স্বামী-স্ত্রীকে স্বাভাবিক ভাবে স্পর্শ করলে(কাম ভাব ব্যতিত)ওযুনষ্ট হয় না।


৩. লজ্জা স্থানে কোন কাপড়ের উপর দিয়ে হাত পড়লে বা নজর পড়লে ওযু নষ্ট হয়না।


৪. কারো ওযু ছিল হঠাৎ সন্দেহ হলো যে,ওযু আছে কি নাই।এই অবস্থায় ওযু আছে বলেধরে নিতে হবে।তবে নতুন ওযু করে নেওয়াই উত্তম।


৫. কারো ওযু ছিলনা পরে ওযু করেছে কিনা তা সন্দেহ হলে এই অবস্থায় ওযু করে নিতেহবে।


তায়াম্মুমঃ-অতঃপর পানি না পাও তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও অর্থাৎ স্বীয় মুখ মন্ডল ও হস-দ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেললে।



ওযুর মাসয়ালা


১. মুখমন্ডল ধোয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন মাথার চুলের গোড়া থেকে থুতনিপর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন- ধোয়া হয়।দুই হাতেরসাহায্যে ভালোভাবে মুখমন্ডল ধুতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে যেন দুই ভ্রুর পশমেরগোড়া পর্যন্ত পানি পৌছে।যদি মুখ এবং চোখ এরকম জোর করে বন্ধ করে রাখা হয়যাতে চোখের পাতা অথবা ঠোটের কিছু অংশ শুকনা থাকে তবে অজু হবেনা।


২. পুরুষগন মুখ মন্ডল ধোয়ার পর ভিজা হাতের আঙ্গুলি দিয়ে দাড়ি খেলাল করবে তবেতিনবারের বেশী খেলাল করবেনা।


৩. অজুর মধ্যে থুতুনি ধোয়া ফরজ।থুতুনিতে দাড়ি থাকুক বা না থাকুক।অর্থাৎ ইহামুখমন্ডল ধোয়ার আওতায় পরে।


৪. মুখ বন্ধ করলে ঠোটের যে অংশ স্বাভাবিক ভাবে দেখা যায় সে অংশ ধোয়া ফরজ।


৫. হাতে আংটি থাকলে,মেয়েদের চুড়ি থাকলে এর নীচে পারি পৌছাতে হবে।নাকেরনথের নীচের চামড়াতেও পানি পৌছাতে হবে।


৬. নখের ভিতর আটা বা চুন ঢুকে শক্ত হয়ে থাকার কারনে যদি নখের ভিতরে পানি নাযায় তবে আটা বা চুন বের করে সেখানে পানি পৌছাতে হবে।


৭. এক অঙ্গ ধোয়ার পর আর এক অঙ্গ ধুতে এত দেরী করা ঠিক হবেনা যাতে ইতিমধ্যেপ্রথম অঙ্গ শুকিয়ে যায়।


৮. প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময় ভাল করে ঘষে মেজে ধোয়া জরুরী।


৯. হাতের পায়ের নখে পালিশ থাকলে তা প্রথমে তুলে ফেলে ওযু করতে হবে।


১০. ওযু করার পর যদি দেখা যায় হাতের বা পায়ের কোন অংশ শুকনা রয়ে গেছেতাহলে সেখানে পানি প্রবাহিত করে দিতে হবে।শুধু ভিজা হাতে মুছলে হবে না।


১১. ওযু করার সময় দুনিয়ার কথাবার্তা বলা,নাপাক স'ানে বসে ওযু করা মাকরুহ।


১৩. হযরত বুরায়দা(রাঃ) থেকে বর্নিত,নবী(সঃ) মক্কা বিজয়ের দিবসের সময় একওযুতে কয়েক ওয়াক্তের নামায আদায় করেছিলেণ।*মুসলীম*।


মাসয়ালাঃ- এক ওযুতে একের অধিক নামায পড়া জায়েজ।


১৪. হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) একদা ফজরের নামাযের পর হযরতবেলাল(রাঃ) থেকে জিজ্ঞাসা করলেন,হে বেলাল!ইসলাম গ্রহন ব্যতিত কোন নফলআমলের উপর তোমার বড় আশা হয় যে,তোমায় ক্ষমা করে দেওয়া হবে?কেননা আমিজান্নাতে আগে আগে তোমার চলার আওয়াজ শুনেছি।হযরত বেলাল(রাঃ)বললেন,আমি এর চেয়ে বেশী আশান্বিত কোন আমল করিনি যে,দিবা রাত্র যখনই ওযুকরি তখন যা তৌফিক হয় নামায  পড়ি।*বোখারী ও মুসলিম*।


১৫. হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব(রাঃ) বলেন,রাসুল(সঃ) এরশাদ করেছেন,যে ব্যক্তিপুর্নভাবে ওযু করে এই দোয়া পড়বে“আশহাদু আল্লাই লাহা ইল্লাল লাহু ওয়েদাহুলাশরিকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু” সেই ব্যক্তির জন্যজান্নাতের আটটি দরজা খোলা থাকবে যেটা ইচ্ছা হয় প্রবেশ করতে পারবে।*মুসলিম.আবু দাউদ ও তিরমিজি*।


১৬. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর(রাঃ) হইতে বর্নিত,নবী(সঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি ওযুথাকা অবস্থায় নতুন ওযু করে নেয় তার জন্যে দশটি নেকী লিখা হয়।-*তিরমিজি*


১৭. রাসুল(সঃ) বলেছেন,যখন কোন মুসলমান অযু করে এতে তার চেহারা ধৌত কওেতখন পানির সাথে তার চেহারা থেকে সকল গুনাহ বের হয়ে যায় যা তার চোখের দৃষ্টিদ্বারা সংঘঠিত হয়েছিল।যখন হাত ধৌত করে তখন হাতের সকল গুনাহ পানির সাথেবের হয়ে যায় যা তার হাতের দ্বারা হয়েছিল।যখন পা ধৌত করে তখন পায়ের দ্বারা যেসব গুনাহ করা হয়েছে তা বের হয়ে যায়।সে অযু থেকে ফারেগ হওয়ার সাথে সাথেসকল গুনাহ(ছগিরা)থেকে পাক ছাফ হয়ে যায়--মুসলীম শরীফ।


১৮. নবী (সঃ) বলেছেন,আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয় বলব না,যাদ্ধারা আল্লাহতায়ালা গোনাহ মার্জনা এবং মর্যাদা উঁচু করেন?তা হল,মনে চায়না এমন সময়েপূর্নরূপে ওযু করা,মসজিদের দিকে পা বাড়ানো এবং এক নামাযের পর আরেকনামাযের জন্য অপেক্ষা করা।এটা যেন আল্লাহর পথে জেহাদ করার জন্যে ঘোড়া প্রস্তুতরাখা---এহইয়াউ উলুমিদ্দিন।


আরও পড়ুন, 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন