ইসলামিক দৃষ্টিতে বিয়ের ফযীলত

 

ইসলামিক দৃষ্টিতে বিয়ের ফযীলত
বিয়ের ফযীলত

বিয়ের ফযীলত


মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সৃষ্টিজগতের সকল কিছুকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে তিনি মানবজাতিকে তৈরী করেছেন। মানবজাতিকে পুরুষ-নারী এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। সৃষ্টিগতভাবেই এক শ্রেণীর প্রতি আরেক শ্রেণী আকৃষ্ট হয়ে থাকে। সুশৃংখল সমাজব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে এই বিপরীতমুখী দুই শ্রেণীর পারস্পরিক সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়া হিসেবে তিনি তা শরী'আতে "বিয়ে” নামক বন্ধন ব্যবস্থার আদেশ দিয়েছেন।


আরও পড়ুন, 

          ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব ও ফজিলত  

ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ 

ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্ব নবীর ভুমিকা  

মদিনা সনদ ও মদিনা সনদের তাৎপর্য 

খিলাফত ও খুলাফায়ে রাশেদীন 


বিয়ে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যে, এতদ্ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন যে, “বান্দাহ যখন বিয়ে করল, তখন তার দ্বীনদারী অর্ধেক পূর্ণ হয়ে গেল। অবশিষ্ট অর্ধেকের ব্যাপারে সে যেন আল্লাহকে ভয় করতে থাকে।"


মানুষের অধিকাংশ গোনাহ দু'টি কারণে সংঘটিত হয়। একটি হয় তার লজ্জাস্থানের চাহিদা পূরণের কারণে, অন্যটি হয় পেটের চাহিদা পূরণের নিমিত্তে। বিয়ের কারণে মানুষ প্রথমটার হিফাজতের রাস্তা পেয়ে যায়। আর রিযিকের ব্যাপারে তাকে ফিকির মন্দ থাকতে হয়। যাতে করে হারাম থেকে সে বাঁচতে পারে। একজন লোক খুব বড় আবেদ। তাহাজ্জুদ, চাশত আওয়াবিন পড়ে অর্থাৎ খুব নফলগুজার; কিন্তু সংসারের সাথে কোন সংশ্রব নেই। আরেকজন লোক ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মু'আকান্দা আদায় করে অবিশিষ্ট সময়ে পারিবারিক জিম্মাদারী আদায় করে। ফলে তার নফলের কোন সুযোগ হয় না।


এতদসত্ত্বেও এই দুই ব্যক্তির মধ্যে শরী'আত দ্বিতীয়জনকেই অধীক ইবাদত গুজারের মর্যাদা দান করেছে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত মুতাবিক বিয়ে-শাদী করে পরিবারের ঝক্কি-ঝামেলা কাঁদে নিয়ে হালাল রিযিকের ফিকির করছে, সে ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক মর্যদাশীল, যে চব্বিশ ঘণ্টা মসজিদে পড়ে থাকে বা বনে-জঙ্গলে সন্ন্যাসীর মতো জীবন-যাপন করে সবরকম সাংসারিক দায়িত্ব থেকে নিজেকে মুক্ত রেখে তাসবীহ তাহলীলে মশগুল থাকে।


বিয়ের অন্যতম আরো আরো একটা ফায়িদা হচ্ছে এই যে, এর দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ পালন করা হয়। তিনি ইরশাদ করেন-“বিয়ে করা আমার সুন্নাত"। আরেক হাদীসে এসেছে-“তোমাদের মধ্যে যাদের সামর্থ আছে, তারা বিয়ে কর। কারণ, এর দ্বারা দৃষ্টি ও লজ্জাস্থানের হিফাজত হয়। (মিশকাত শরীফ-০০)


এছাড়াও বিয়ের দ্বারা মানুষ অনেক হারাম কাজ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে। নেক আওলাদ অর্জন করতে পারে। নেক আওলাদ এমন এক সম্পদ, যা মৃত্যুর পরে কঠিন অবস্থার উত্তরণে পরম সহযোগিতা করতে সক্ষম হয়।


কারো যদি নেক সন্তান থাকে, তারা যত নেক আমল করবে, সেগুলো পিতা-মাতার আমলে যোগ করে দেয়া হবে। (সুবহানাল্লাহ)


বিয়ে-শাদী যেহেতু শরী'আতের দৃষ্টিতে খুবই মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত, সুতরাং এর মধ্যে কোনভাবে গুনাহ এবং আল্লাহর নাফরমানীর সংমিশ্রণ যাতে না হয়, সেদিকে খুবই খেয়াল রাখবে। বেপর্দা, অপব্যয়-অপচয় এবং ছবি তোলা, নাজায়িয দরাসূলুল্লাহ-দাওয়া থেকে দূরে থাকবে। নতুবা মুবারক বিয়ের সমস্ত বরকত নষ্ট হয়ে যাবে এবং স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনের সুখ-শান্তি সূচনাতেই ধ্বংস হয়ে যাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন